ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে হামাসের সাথে চলমান আলোচনার মধ্যেও বর্বর হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইল। রোববার একদিনেই প্রায় একশ’ নিরীহ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে নেতানিয়াহু বাহিনী। এবং আহত হয়েছে দুই শতাধিক।
একদিকে চলছে মারণাস্ত্র দিয়ে নজিরবিহীন হামলা, অন্যদিকে, তীব্র শীতের মধ্যে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা নগরীর ঘরবাড়ি হারা বাসিন্দাদের জন্য মানবিক সহায়তা প্রবেশেও বাধা দিচ্ছে নেতানিয়াহু প্রশাসন।
এতে তাঁবু, কম্বলসহ গরম পোশাকের সংকটে শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাবে প্রতিনিয়ত প্রাণহানির সংখ্যা বাড়ছে। গেলো কয়েকদিনে হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অন্তত ৮ শিশুর প্রাণ গেছে। ইসরাইলি আগ্রাসনের মধ্যে তীব্র শীতের সঙ্গেও লড়াই করতে হচ্ছে অসহায় বাসিন্দাদের।
ইসরাইলি আগ্রাসনে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে মানবিক সংকট চরম পর্যায় পৌঁছানোয় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জোরালো হচ্ছে গোটা বিশ্বে। চলমান আলোচনায় ইসরাইলের দেয়া তালিকা অনুযায়ী ৩৪ জিম্মিকে মুক্তি দিতে সম্মত হওয়ার দাবি করেছে হামাস। যদিও, এই দাবি অস্বীকার করছে ইসরাইল। এতে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় আরও একবার দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ছে হামাস-ইসরাইল।
এ অবস্থায় আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পন্ন ও বন্দিবিনিময় বাস্তবায়নে ওয়াশিংটন কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। দক্ষিণ কোরিয়া সফরে গিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। বলেন, ২০ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে গাজায় যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে তৎপর বাইডেন প্রশাসন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, ‘আমরা এই চুক্তিটি বাস্তবায়নে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের দেয়া পরিকল্পনা অনুযায়ী নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছি। কারণ এই যুদ্ধে পুরো বিশ্ব পিছিয়ে গেছে। তাই এটিকে শেষ করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছি। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এটি ফিনিশিং লাইনে নিয়ে আসতে প্রতিদিন এবং প্রতিটি মিনিট গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করে যাবো।’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় আগ্রাসন চালিয়ে ৪৫ হাজার ৮০০ এর বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইল।