এ সময়ে রাষ্ট্রের কিছু সংস্কার করতে না পারলে আর কখনোই করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ২০০৭ সালে একবার চেষ্টা করেছিলাম, কিছু কিছু করেছিলাম সেগুলো থাকেনি ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলোর কারণে। এখন যদি না করতে পারি, সংবিধানের দোহাই দিই, অন্যান্য আইনের দোহাই দিই, তাহলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যারা রক্ত দিয়েছেন, তাদের প্রতি অন্যায় হবে। বলছি না যে আমরা চার-পাঁচ বছর থাকব। এক বছরের মধ্যে সংস্কার করা সম্ভব।’
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে সংস্কার সম্ভব না হলে আর কখনোই হবে না বলে মন্তব্য করেছেন নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার এম সাখাওয়াত হোসেন। রাজধানীর খামারবাড়িতে এক অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন তিনি।
ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন বিষয়ক জাতীয় সংলাপের ’সংস্কারের দায় ও নির্বাচনের পথরেখা’ শীর্ষক সংলাপ অধিবেশন–৪ এ নৌ পরিবহন উপদেষ্টা আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
নৌ পরিবহন উপদেষ্টা বলেন, ‘জনগণের প্রতিনিধিত্ব তৈরিতে দ্বি–কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট হলে ভালো গাইডলাইন তৈরি করা সম্ভব।’
এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, তরুণদের রাজনৈতিক দল গঠনে উৎসাহিত করা উচিত। ‘তাদের নিরুৎসাহিত করা ঠিক নয়। আমরা মনে করি নতুন রক্ত প্রয়োজন। তাদের নিরুৎসাহিত করবেন না। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি অনুরোধ তাদের উৎসাহিত করুন। তারা আপনাদের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। তাদের যদি উৎসাহিত না করেন, তাহলে আমরা এ জিনিসই (আওয়ামী লীগের পতন) দেখব। আজ না হয় ১০ কিংবা ১৫ বছর পরে আবারও দেখব।’
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি ধৈর্য ধরার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ধৈর্য ধরতে হবে। কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। নির্বাচন আইন পরিবর্তন করলে হবে না। রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও পদ্ধতির পরিবর্তন করলেই নির্বাচনী আইনও পরিবর্তন হয়ে যাবে। গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের আগে বলেছিলাম, এবার যারা নির্বাচনে যাবে আম-ছালা দুটোই যাবে। সেটাই হয়েছে।’
ছাত্ররাজনীতি সম্পর্কে উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমাদের ছাত্রদের নিয়ে রাজনীতি করতে গেলে সেটার পরিণতি কী, সেটা দেখতে হবে। ছাত্রদের রাজনীতি অবশ্যই করা উচিত। তবে সেটা অবশ্যই ছাত্র সংসদের মাধ্যমে হওয়া উচিত। ছাত্রদল বা ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, শেষ পর্যন্ত লীগ হতে হতে বাচ্চা লীগও হয়ে গেছে। সেটার পরিণতি কী, সেটা দেশ দেখছে।
রাজনৈতিক দলের চাঁদাবাজি প্রসঙ্গে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘পলিটিক্যাল পার্টি অ্যাক্ট (রাজনৈতিক দল আইন) তৈরি করতে হবে। কোনো অযুহাতেই তাদের চাঁদাবাজি মেনে নেওয়া যাবে না। তাই পলিটিক্যাল পার্টিগুলোতেও সংস্কার করা জরুরি।’