এসব দেখি কানার হাটবাজার
এসব দেখি কানার হাটবাজার

সৈয়দ ইফতেখার হোসেন, লেখক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক

শান্তির ফেরিওয়ালা ড. ইউনুসের বাংলাদেশের জোর পূর্বক ক্ষমতা দখলের পাঁচ মাস পার হলো ইউনুসব বিশ্বে এক মাত্র শান্তির ফেরিওয়ালা যিনি একটি নির্বাচিত সরকারকে দীর্ঘ ষড়যন্ত্রমূলক পরিকল্পনার মাধ্যমে উৎখাত করে নিজে ক্ষমতা দখল করার অপকর্মটি করেছেন।

এর পূর্বে ক্ষমতায় থেকে কোন কোন ব্যক্তি শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও আছেন (২০০৯)। তখন তাঁর এই পুরষ্কার পাওয়া নিয়ে বিশ্বব্যাপি মানুষ অবাক হয়েছিলেন কারণ যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রাক্কালে বারাক ওবামাকে তার নিজ দেশের মানুষ তেমন একটা চিনতো না। নির্বাচনি প্রচরানায় গেলে মানুষ তার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতো।

আর সেই ওবামা দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর মধ্যপ্রাচ্যে নানা অজুহাতে যুদ্ধ বাধিয়ে সব চেয়ে বেশী মানুষ হত্যা করেছেন। ইউনুসের ব্যাপারটা ভিন্ন । তিনি হতদরিদ্র মানুষকে দুই চারশত টাকা বা হাজার দু’হাজার টাকা প্রায় ত্রিশ শতাংশ সুদে ঋণ দিয়ে তাদেরকে বলতেন এই ঋণ ব্যবহার করে তারা দারিদ্রতা থেকে নিজেদের মুক্ত করতে পারবে। ঋণ দেয়ার সময় তিনি যা বলেননি তা হলো সময় মতো ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে তার লোকজন এসে বাড়ির চালার টিন অথবা হালের গরু নিয়ে যাবে। এটি ছিল তার একান্ত পরীক্ষামূলক প্রকল্প কি ভাবে দরিদ্রকে আরো দরিদ্র করা যায়। তিনি তার এই প্রকল্প সফল হয়েছেন। গরীব মানুষের গলা কেটে তিনি বর্তমানে দেশের সেরা ধনিদের একজন ।

যে ইউনুস বিশ্বে পরিচিত হয়েছিলেন তার প্রতারণামূলক প্রকল্পের মাধ্যমে সেই ইউনুস এক দীর্ঘ ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে একটি উদিয়মান অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশকে তার পাঁচ মাসের অপশাসনের মাধ্যমে একটি হতদরিদ্রদেশে পরিণত করেছেন। এই কাজটি করার পূর্বে তিনি নির্বাচিত শেখ হাসিনা সরকারকে যখন উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করেন তখন তিনি নিজেকে এই দেশের ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ন হয়েছিলেন বলে ঘোষণা করেছিলেন। তার এই জোর পূর্বক ক্ষমতা দখলকে এই দেশের কিছু নষ্ট বুদ্ধিজীবী অভিনন্দন জানিয়েছিলেন তারা তাকে সৃষ্টিকর্তা প্রেরিত দূত হিসেবে দেখেছিলেন ।

স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষ একাধিক সরকার দেখেছে । তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারকে দেখেছে, তাঁর নেতৃত্বে কিভাবে একটি যুদ্ধবিদ্ধস্থ দেশকে নিজের পায়ে দাঁড় করানোর কাজটি হয়েছিল তার সাক্ষি হয়েছে। যে দেশটি যাত্রার শুরুতে ছিল একটি অনুন্নত অর্থনীতির দেশ সেই দেশকে তিনি তাঁর সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে স্বল্পন্নোত দেশের কাতারে উন্নিত করেছিলেন। সে সময় বিশ্বের অনেক বাঘা বাঘা অর্থনীতিবিদ মন্তব্য করেছিলেন ‘বাংলাদেশ টিকে থাকলে বিশ্বের যে কোন দেশ টিকে থাকবে’। বঙ্গবন্ধু তাদের সেই ভবিষ্যত বাণী ভুল প্রমাণিত করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু সময়ের প্রয়োজনে বাকশাল শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছিলেন যার জন্য তাঁকে নানা সমালোচনার মুখেও পরতে হয়েছিল।

এরপর জিয়া এরশাদের সামরিক শাসন দেখেছে এই দেশের মানুষ । তাদের শাসনামলে দেশে নির্বাচন ব্যবস্থা ও গণতন্ত্র ধ্বংস হতে দেখেছে । তবে তাদের আমলেও দেশে কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে। এক এগারো সরকারের সময় দেশের রাজনীতির অনিশ্চিত যাত্রার আলামত দেখেছে দেশের মানুষ । আর এই ক্ষমতা দখলকারি ইউনুসের আমলে বিশ্ব দেখলো একটি মানুষ যিনি নানা উপায়ে সারা বিশ্বে নিজেকে পরিচিত করেছিলেন তার নেতৃত্বে কিভাবে একটি দেশের শুধু অর্থনীতিই নয় দেশটি এখন বিশ্ব দরবারে একটি বন্ধুহীন দেশে পরিণত হয়েছে ।

এই মুহূর্তে বাংলাদেশের এক মাত্র মিত্র হচ্ছে পাকিস্তান যে নিজেই নিজের অস্থিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য নিত্যদিন লড়াই করছে । আর এই পাকিস্তানের সাথে ১৯৭১ এ এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নিজেকে স্বাধীন করেছিল । সেই যুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ বাঙালি নিজের জীবন উৎসর্গকরেছিল আর আনুমানিক তিন লক্ষ নারী নিজের সম্ভ্রম খুয়েছিলেন । এই সব ইতিহাসকে ইউনুস অতীতের বিষয় বলে তা ভুলে যেতে বলেছেন ।

ক্ষমতা দখল করে পাঁচ মাসে ইউনুস নিজেকে এক নিম্ন মেধার অপদার্থতো প্রমাণ করেছেনই তার চাইতেও এখন তার নির্বাচিত সভা পারিষদরা কে কার চাইতে বড় অপদার্থ তা প্রমাণ করতে সকলে ব্যস্তহয়ে পরেছেন। এমন কি বাদ যায়নি তার মুখপাত্র শফিকুল ইসলাম যিনি নিজেকে অর্থনীতি থেকে রাষ্ট্র শাসন ও নিরাপত্তা সব কিছুতেই বিশ্বখ্যাত পন্ডিত মনে করেন ।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে যে সরকারই থাকুক প্রত্যেক সরকারই কিছু না কিছু জনহিতকর কাজ করার চেষ্টা করেছে যা উল্লেখ করেছি। রাজনৈতিক চিন্তাধারা ভেদে তা কারো পছন্দ হয়েছে বা হয়নি। কিন্তু একটি নির্বাচিত সরকারকে হঠিয়ে ক্ষমতা দখলকারি ইউনুস সরকারই এক মাত্র ব্যতিক্রম যার গত পাঁচ মাসে অর্জন বলতে কোন কিছু নেই। তার একমাত্র অর্জন তার তথাকথিত তিন শূন্য তত্তে¡র একটি বড় শূন্য এখন দৃশ্যমান। প্রথমে তিনি একটি প্রজন্মকে সম্পূর্ণ নষ্ট করেছেন । যে প্রজন্ম গবেষক, বিজ্ঞানি, সৃজনশীল শিল্পের কারিগর বা চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখার কথা সেই প্রজন্ম এখন স্বপ্ন দেখে রাস্তায় দাঁড়িয়ে পাঁচশত টাকার একজন ট্রাফিক পুলিশ হওয়ার। নিজের স্কুলের শিক্ষকের বা প্রধান শিক্ষকের গায়ে হাত তুলে তাঁকে জনসম্মুখে অপমান করে এই শিক্ষার্থীরা স্বগর্বে বলে ‘উনার মাথায় থাপ্পড় মারার অনেক দিনের ইচ্ছা আজ পূরণ হলো’। আর যে দূবৃত্ত নেতাদের মাধ্যমে এই তরুণ প্রজন্মকে ইউনস নষ্ট করেছে বর্তমানে তাদেও একমাত্র পেশা হচ্ছে চাঁদাবাজি। একেক জনের ব্যাংক একাউন্টে এখন কোটি কোটি টাকা । এক সময় যার পকেটে টেম্পোতে চড়ার ভাড়া ছিল না সে এখন কোটি টাকার গাড়ী অথবা হেলিকপ্টারে যাথায়ত করে ।

যে আন্দোলনটা শুরু হয়েছিল সরকারি চাকুরিতে কোটা বিলুপ্তির কথা বলে তা পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে বিপথে পরিচালিত হয়ে গত জুলাইয়ের ১৮ তারিখের পর হতে তা রূপান্তর হয় গত তিপান্ন বছরে এই দেশ যা কিছু অর্জন করেছিল তা পরিকল্পিত ভাবে ধ্বংস করার কর্মযজ্ঞের মাধ্যমে যার পিছনে মূল কারিগর ছিল শান্তির জন্য অর্ধেক নোবেল জয়ী ড. ইউনুস ও তার বিদেশি দোসররা। নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে ইউনুসের ষড়যন্ত্রটা শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে। তাকে সার্বিক সহায়তা করেছিল তার বিশেষ উপদেষ্টা মাহফুজ আলম যাকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনের এক অনুষ্ঠানে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন শেখ হাসিনার নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের ‘মাষ্টারমাইন্ড’ বলে। সেই ব্যক্তি এখন ইউনুসের বিশেষ উপদেষ্টা। পরে জানা গিয়েছে মাহফুজ আলম বিশ্বব্যাপি নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরিরের একজন সক্রিয় সদস্য । তার সহায়তায় বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বে একটি জঙ্গিরাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে। এই মুহূর্তেএই সব জঙ্গিরা প্রকাশ্যে রাজধানীর সড়কে তাদের পতাকা নিয়ে মিছিল করতে পারে। বাংলা একাডেমির ঐতিহাসিক একুশের বইমেলা ভন্ডূল করার পরিকল্পনা করতে পারে।

শেখ হাসিনার শাসনকালের অনেক দূর্বলতা ছিল কিন্তু তার অসামান্য অর্জনগুলোর মধ্যে একটি ছিল দেশ থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূল। ইউনুস এই জঙ্গিবাদকে নূতন জীবন দেয়ার জন্য দেশের আঠারোটি কারাগার হতে হিজবুত তাহরির, আনসারউল্লাহ বাংলা টিম, জামায়াত, জেএমবি, হুজি’র মতো অনেক জঙ্গি দলের সদস্য ও নেতাদের মুক্ত করে দিয়েছেন। এদের একজন, আনসার উল্লাহ বাংলা টিমের খলিফা জসিম উদ্দিন রহমানিতো কারাগার থেকে বের হয়ে অপেক্ষমান খোলা জীপে সরকারি মদদে তার বক্তব্য দিতে দিতে নিজ গন্তব্য স্থানে রওনা দিয়েছিলেন।

ইউনুস জমানায় দেশের আর্থ-সামাজিক মেরুদন্ড সম্পূর্ণ রূপে ভেঙ্গে পড়েছে। সব চাইতে ন্যাক্কার জনক যে অপকর্মটি তার মোসাহেব উপদেষ্টা ও আইএমএফ’র পরামর্শেজনগণকে তিনি সম্প্রতি উপহার দিয়েছেন তা হচ্ছে মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় প্রায় একশত জিনিষপত্রের উপর ১৫ শতাংশের থেকেএকশত শতাংশ কর বা ভ্যাট অর্থবছরের মাঝ পথে আরোপ করা। বিশ্বের প্রত্যেকটা দেশে তাদের আর্থিক বছরের শুরুতে পরের বছরের জন্য একটি বাজেট দেয়। সেই বাজেটের দুটি অংশ থাকে। রাজস্ব ও উন্নয়ন। থাকে পরের বছরের কর ব্যবস্থার পরিকল্পনা। বছরের মাঝ পথে এসে এমন গণহারে বাজেটের বৃদ্ধির নজির বিশ্বের অন্য কোন দেশে আছে বলে জানা যায় না। বাদ যায়নি কিছু।

টিস্যু পেপার থেকে শুরু করে বাচ্চার দুধ। মানুষের জরুরী প্রয়োজনের একটি পণ্য ঔষধ যাতে বর্তমানে ভ্যাটের পরিমাণ ১৭ শতাংশ তাও বাড়ানোর ঘোষণা আসছে। এই ভ্যাটের কারণে সাধারণ মানুষের খাওয়ার চাল কেজিতে দাম সাত থেকে দশ টাকা বেড়েছে । অথচ বিশ্ব বাজারে চালের দাম কমতির দিকে। শেখ হাসিনা দেশের প্রায় সোয়া কোটি নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তের জীবনে কিছুটা স্বস্তিআনার জন্য তাদের নানা ধরণের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি (যেমন বিধবা ভাতা, বয়ষ্ক ভাতা) দিয়ে রেখেছিলেন। ইউনুস সরকার তা বন্ধ করে দিয়েছে। টিসিবিতে যে চাল দেয়া হয়েছে তাও বন্ধ। প্রায় ৩৭ হাজার মানুষের টিসিবির সব ধরণের সুযোগ সুবিধা হতে বঞ্চিত। খাদ্যাভাবে অনেক স্থানে মানুষ কুকুরের সাথে ডাস্টবিন হতে খাবার ভাগাভাগি করে খাচ্ছে এমন চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে । পাঁচ মাস আগে যে ডলারের দাম সর্বোচ্চ ১১০ টাকা ছিল তা বর্তমানে ১২৭ টাকা হয়েছে। খোলা বাজারে তার মূল্য ১৩০ থেকে ১৩২ টাকা । এর ফলে দেশে প্রত্যেকটা আমদানিকৃত শিল্পের কাঁচামাল ও মূলধনী যন্ত্রপাতির মূল্য জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। সরকারের নানা অপরিণামদর্শী পদক্ষেপের কারণে দেশে একের পর এক কলকারখানা বন্ধ হচ্ছে। বর্তমানে শুধু তৈরী পোষাক খাতের দুই শত কারখানা বন্ধ হয়েছে। গত পাঁচ মাসে দেশে এক ডলার পরিমানের দেশি বা বিদেশি বিনিয়োগ হয়নি। অনেক বিদেশী বিনিয়োগকারি এই দেশ থেকে তাদের বিনিয়োগ সরিয়ে নিয়েছে। বর্তমানে সম্পূর্ণ ভাবে কর্মহীন বেকারের সংখ্যা ছাব্বিশ লাখের উপর। এর উপর আছে দেশে লাগামহীন মূদ্রাষ্ফিতি যা বর্তমানে প্রায় তের শতাংশ। এমনটা চলতে থাকলে তা কুড়ি শতাংশ পৌঁছাতে হয়তো আর বেশি সময় লাগবে না।

তখন দেশে ভয়াবহ খাদ্য দূর্ভিক্ষ অবশ্যম্ভাবি হয়ে পড়বে। আন্তর্জাতিক সংস্থা সমূহ আগাম জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের গড় প্রবৃদ্ধি চলতি বছর দুই শতাংশের নীচে থাকবে। অথচ করোনা কালেও শেখ হাসিনা সরকার তা ৪ শতাংশ রাখতে সক্ষম হয়েছিল। শেখ হাসিনার শাসনামলে দেশের শেয়ার মার্কেট হতে হাজার কোটি টাকা নিয়মিত লোপাট হতো। তখন সকলে অভিযোগের আঙ্গুল তুলতো সালমান রহমানের প্রতি। তাকে ডাকা হতো দরবেশ নামে। গত পাঁচ মাসে শেয়ার বাজার হতে চল্লিশ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। এখন কোন দরবেশ এই কাজটি করছে ? এই সময়ের মধ্যে সংশোধিত এডিপির বরাদ্দ কমেছে ৪৯ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে রেকর্ড উচ্চতায় খেলাপি ঋণ। শুধু আগস্ট-অক্টোবরে তা বেড়েছে প্রায় ৭৪ হাজার কোটি টাকা। আজ যে শিশু জন্ম নিচ্ছে তার মাথায়ও এক লাখ টাকার ঋণ। এই সব হিসাব সরকারি আর আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংস্থা সমূহের।

ইউনুসের মোসাহেব সভাপারিষদের মধ্যে কয়েকজন অর্থনীতিবিদ আছেন যারা তথাকথিত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র উপদেষ্টাদের ভয়ে বলতে বাধ্য হন লাগামহীন অর্থনৈতিক চাপ সাধারণ মানুষের উপর পরবে না। তারা এই দুর্বৃত্ত উপদেষ্টাদের বলতে পারেন না দেশের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড যে ভেঙ্গে যাচ্ছে তা পুররুদ্ধার করতে কয়েক প্রজন্মকে খেসারত দিতে হবে। এই পাঁচ মাস আগেও বাংলাদেশের মানুষ একটি সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতো সেই দেশের মানুষ বর্তমান আফ্রিকার ইথোপিয়া, দক্ষিণ সুদান বা মালির দূর্ভিক্ষ পীড়িত অঞ্চলের মানুষের মধ্যে নিজেকে আবিষ্কার করে।

তবে একটি কারণে ড. ইউনুসকে ধন্যবাদ দিতে হয়। তিনি ক’দিন আগে সিনিয়র সাংবাদিক নূরুল কবিরকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অকপটে স্বীকার করেছেন তিনি রাষ্ট্র পরিচালনার কিছুই জানেন না। এই কাজ তার নয় তিনি শিখছেন। তিনি শুধু সুধের কারবারে সিদ্ধহস্ত। তিনি জানেন কি ভাবে নিজের প্রতিষ্ঠানের ৬৬৬ কোটি টাকার কর আদালতের মাধ্যমে মওকুফ করিয়ে নেয়া যায় বা কিভাবে তার একই প্রতিষ্ঠানের সকল ধরণের কর ২০২৯ সাল পর্যন্ত কর আওতা মুক্ত করিয়ে নেয়া যায়। ইউনুস হয়তো নিকট ভবিষ্যতে চলে যাবেন। কিন্তু একটি দেশকে কি ভাবে তিনি ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছেন তার জন্য এই দেশের মানুষ তাকে জন্ম-জন্মান্তর অভিশাপ দেবেন। ইউনুসের পাঁচ মাসের কর্মকাণ্ডে দেখে ও তার কথা শুনে মনে হচ্ছে তিনি নিজে একজন কানা (অন্ধ) আর তিনি একদল অন্ধদের নিয়ে একটি অন্ধকার পথ পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করছেন। এক কথায় দেশে এখন মানুষ ‘কানার হাটবাজারের’ প্রসার দেখছে।

শেষ করি প্রায় দুই হাজার বছর আগের চীনা দার্শনিক সুনজু’র একটি বক্তব্য দিয়ে। তিনি বলেছিলেন ‘একজন নষ্ট মানুষ তার দেশকে পুড়িয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দেবেন যাতে তিনি সেই দেশটির ভশ্মকে শাসন করতে পারেন’। ড. ইউনুসের বেলায় কথাটি একশত ভাগ সত্য। আল্লাহ বাংলাদেশকে হেফাজত করুন। 

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here