বিশ্বখ্যাত তবলাবাদক ওস্তাদ জাকির হোসেন মারা গেছেন। অ্যামেরিকার সান ফ্রান্সিসকো শহরের এক হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানেই তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মৃত্যুর বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন জাকির হোসেনর বন্ধু বাঁশিবাদক ও সংগীতজ্ঞ রাকেশ চৌরাসিয়া। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এ খবর জানিয়েছে।
জাকির হোসেনের কলকাতায় অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা ছিল। তবে শারীরিক অসুস্থতা জন্য বাতিল হয় অনুষ্ঠান। অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল তাকে। তবে বাঁচানো আর গেল না।
জাকির হোসেন দীর্ঘদিন ধরে রক্তচাপজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। জাকির হুসেনের পরিবার সংবাদমাধ্যমকে তবলাবাদকের শারীরিক অসুস্থতার কথা প্রথম জানান। একটি বিবৃতিতে তখন বলা হয়, তবলাবাদক, সংগীতজ্ঞ, প্রাক্তন অভিনেতা তথা ওস্তাদ আল্লা রাখার পুত্র ওস্তাদ জাকির হুসেন অসুস্থ। পরিবার তাঁর দ্রুত আরোগ্যের জন্য প্রার্থনার অনুরোধ জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৫১ সালে ভারতের মুম্বাইয়ে জন্ম ওস্তাদ জাকির হুসেনের। ভারত সরকারের পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ, পদ্মবিভূষণ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি। মাত্র তিন বছর বয়স থেকে তবলার সফর শুরু তার। মাত্র সাত বছর বয়সে একা মঞ্চে অনুষ্ঠান করেছেন তিনি।
ভারত ও বিশ্বব্যাপী খ্যাতিমান এই শিল্পী পাঁচবার গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন, যার মধ্যে চলতি বছরের ৬৬তম গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডে তিনি তিনটি পুরস্কার অর্জন করেন।
ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শাস্ত্রীয় সংগীতশিল্পী হিসেবে জাকির হোসেন ১৯৮৮ সালে পদ্মশ্রী, ২০০২ সালে পদ্মভূষণ এবং ২০২৩ সালে পদ্মবিভূষণ সম্মানে ভূষিত হন।
ছয় দশকের দীর্ঘ সংগীত জীবনে তিনি অসংখ্য ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক শিল্পীর সঙ্গে কাজ করেছেন। তবে ১৯৭৩ সালে ইংরেজ গিটারবাদক জন ম্যাকলাফলিন, বেহালাবাদক এল শংকর এবং পারকাশনিস্ট টি এইচ ‘ভিক্কু’ বিনায়াকরামের সঙ্গে তার যুগান্তকারী প্রকল্পটি সংগীতকে নতুন এক মাত্রায় পৌঁছে দেয়। ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীত ও জ্যাজের মিশ্রণে গড়ে ওঠা এই ফিউশন ধারা সংগীতপ্রেমীদের অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা দেয়।
জাকির হোসেনের মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোকবার্তার ঢল নেমেছে।