প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে আগামী ৩১ ডিসেম্বর “জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র” দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তার সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি ছাত্র আন্দোলনের নিজস্ব কার্যক্রম এবং সরকার এই বিষয়ে কোনোভাবেই সংশ্লিষ্ট নয়।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “এটা একটা বেসরকারি উদ্যোগ। এটাকে বেসরকারি উদ্যোগ হিসেবেই দেখছি। এটার সঙ্গে সরকারের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বাংলামোটরে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ৩১ ডিসেম্বর জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র পাঠ করা হবে। এরই মধ্যে ঘোষণাপত্রের খসড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোকে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
‘জুলাই ঘোষণাপত্র’র মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে ‘নাৎসি বাহিনীর’ মত ‘অপ্রাসঙ্গিক’ ঘোষণা এবং ১৯৭২ সালের সংবিধানকে ‘কবর’ রচনা করার ঘোষণাও দিয়েছেন হাসনাত।
‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, “এটা একান্তই শিক্ষার্থীদের বিষয়। এ বিষয়ে সরকার অবগত নয়।”
আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, “ছাত্ররা যখন ঘোষণা দেবেন তখন আমরা দেখব তারা কী ঘোষণা দিল। যতক্ষণ পর্যন্ত এ ঘোষণাটা না আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত বিষয়টা আমাদের কাছে স্পষ্ট না।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেট্রোরেলের পিলারে আঁকা শেখ হাসিনার গ্রাফিতি মুছে ফেলা বিষয়ে এক প্রশ্নে আজাদ মজুমদার বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের জানিয়েছে, শেখ হাসিনার গ্রাফিতি ভুল বোঝাবুঝির কারণে মুছে ফেলা হয়েছে।
“ঢাবি কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় আইন বলে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মারক সংরক্ষণ করবে। শেখ হাসিনার গ্রাফিতিটি ঘৃণাস্তম্ভ হিসেবে ঘোষণা করা হবে।”
গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ অগাস্টে সরকার পতনের পর পিলারে আঁকা শেখ হাসিনার ওই ছবি লাল রঙের ছোপ দিয়ে তাতে জুতার মালা পরিয়ে দেওয়া হয়। ওই ছবিটি জনতার ক্ষোভ ও ঘৃণার প্রতীক হয়ে ওঠে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, শনিবার রাত ২টার দিকে কয়েকজন লোক মেট্রোরেলের পিলারে শেখ হাসিনার ছবি মুছতে গেলে শিক্ষার্থীরা বাধা দেন। এসময় একটি পিলারে শেখ মুজিবুর রহমানের সম্পূর্ণ ছবি, অন্যটিতে শেখ হাসিনার ছবির মুখের অংশ মুছে ফেলা হয়।
পরে শিক্ষার্থীরা বাধা দিয়ে মোছা বন্ধ করেন এবং পুনরায় সেখানে শেখ হাসিনার ব্যঙ্গচিত্র আঁকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী। এরপর তারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন এ ঘটনায় পরে দুঃখপ্রকাশ করে প্রক্টর কার্যালয় জানিয়েছে সেই পিলারটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ঘৃণাস্তম্ভ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে।