গণঅভ্যুত্থানের এখনো চার মাস পার হয়নি। এর মধ্যেই পরিস্থিতি দিন দিন ঘোলাটে হয়ে পড়ছে। এসবে ভয়ই পাচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যত ভয় তার। তিনি বলেছেন, ‘খুনি হাসিনা ও তার দোসরেরা সব দিক দিয়ে চেষ্টা করছে, আমরা যেন সফল না হই। কোনোভাবে যদি আমরা ব্যর্থ হই, আমরা এখানে যারা রয়েছি, তাদের কারোরই অস্তিত্ব খুনি হাসিনা রাখবে না।’
শনিবার সকালে ময়মনসিংহ নগরের টাউন হলের তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে নিহত হওয়া ৫৫ জনের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা করে আর্থিক অনুদানের বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সারজিস আলম। নগরের টাউন হলের তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে বেলা ১১টা ৯ মিনিটে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ বীরদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সারজিস বলেন, ‘কালো শকুনদের খারাপ চক্রান্ত এখনো থামেনি। আপনাদের দোয়ায় যদি বেঁচে থাকতে পারি তাহলে কোন শহীদ পরিবার ও আহতদের গায়ে একটি টোকাও লাগতে দিব না। শহীদ পরিবার ও আহত ভাইদের কাউকে দুর্দশাগ্রস্ত জীবন যাপন করতে হবে না। এটি করতে হয়তো একটু সময় লাগবে। আমরা জীবনের বিনিময়ে সবটুকু দিয়ে সব সময় আপনাদের পাশে থাকব।’
সারজিস আলম আরও বলেন, ‘আমাদের সকলের দায়িত্ব যে স্বপ্ন নিয়ে, যে স্পিরিট নিয়ে এই অভ্যুত্থান হয়েছে সেটিকে রক্ষা করা। আমরা একদিকে যেমন সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করব, অপরদিকে প্রশাসনসহ সকল স্তরে সার্বিক কাজে সহযোগিতাও করব। প্রশাসনের যারা হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে জড়িত ছিল, ভিডিও ফুটেজ ও ছবি দেখে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এখন যারা প্রশাসনের দায়িত্ব পালন করছে এটি তাদের অস্তিত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত। কারণ তারা আজ এ জায়গায় বসেছেন এই অভ্যুত্থানের ফলে।’
অনুষ্ঠান শুরু করার আগে শহীদ পরিবারের সদস্যদের কাছে গিয়ে খোঁজ নেন সারজিস আলম। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। এ সময় তিনি বলেন, ‘আহাজারি ও দুঃখ দেখে কেউ ঠিক থাকতে পারি না। দেশের প্রতিটি মানুষ এই শহীদ পরিবারের কাছে ঋণী।’
বাংলাদেশে চলমান পরিস্থিতিতে প্রতিনিয়ত বদলাচ্ছে রাজনীতির গতি প্রকৃতি। এমন দেখে মনে আশঙ্কা জেগেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর মনেও। ১২ নভেম্বর ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছিলেন– রাজনীতিবিদরা হাত মেলাচ্ছে, আর বিপ্লবীদের ফাঁসির দড়ি এগিয়ে আসছে।’ তিনি এই স্ট্যাটাস কাকে উদ্দেশ্য করে দিয়েছেন তা জানা যায়নি।