বাংলাদেশের সঙ্গে শক্তিশালী নিরাপত্তা জোট গঠনে আগ্রহ প্রকাশ করেছে পাকিস্তান
বাংলাদেশের সঙ্গে শক্তিশালী নিরাপত্তা জোট গঠনে আগ্রহ প্রকাশ করেছে পাকিস্তান

বাংলাদেশের সঙ্গে শক্তিশালী নিরাপত্তা জোট গঠনে আগ্রহ প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। দুই দেশের সামরিক নেতৃত্বের সাম্প্রতিক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। খোদ পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর জনসংযোগ বিভাগ- আইএসপিআর এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য আসেনি।

বাংলাদেশ-পাকিস্তানের সামরিক সম্পর্ক শক্তিশালী করার সম্ভাবনা নিয়ে বিভিন্ন বরাতে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন। এতে বলা হয়,
মঙ্গলবার পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির সেনা সদরদপ্তরে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান।

বৈঠকে দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং দুই দেশের সামরিক সম্পর্কের উন্নয়ন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। উভয়পক্ষ দুই দেশের সম্পর্ককে ভ্রাতৃপ্রতিম হিসেবে বর্ণনা করে বহিরাগত প্রভাবের মধ্যেও সম্পর্ক দৃঢ় রাখার ওপর জোর দেন।

বৈঠকে প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা, তথ্য বিনিময় এবং যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তা জোরদারের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা হয়। পাকিস্তানের সেনাপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের যৌথ প্রচেষ্টা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

পাকিস্তানের যৌথ চিফস অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জার সঙ্গেও লেফটেন্যান্ট জেনারেল কামরুল হাসানের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে কৌশলগত স্বার্থ এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতার নতুন উপায় নিয়ে আলোচনা হয়। উভয়পক্ষই আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার বিষয়ে একমত হন।

বিগত ১৫ বছর ধরে ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখার কারণে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের সম্পর্ক সীমিত ছিল। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের গঠনের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন মোড় নিয়েছে।

সম্প্রতি মিশরের কায়রোতে ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে বৈঠক হয়। বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। এর অংশ হিসেবে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক, পণ্য আমদানি-রপ্তানি এবং জাহাজ চলাচল এরইমধ্যে পুনরায় শুরু হয়েছে।

সাম্প্রতিক সামরিক ও কূটনৈতিক অগ্রগতি ইঙ্গিত দিচ্ছে, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে যাচ্ছে, যা আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। দেশ দুটির সম্পর্ক উষ্ণ হলে তা ভারতের জন্য মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশের বিষয়ে অনেকটা মন ভার করে আছে নয়াদিল্লি। শেখ হাসিনার পতন এখনো হজম করতে পারছে না দেশটি। ইসলামাবাদের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ক মজবুত হলে তা বিপদ সংকেত হয়ে আসতে পারে ভারতের জন্য।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here