ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের বিষয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। বাশারের পতন হিজবুল্লাহ ও ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের ‘সরাসরি ফলাফল’ বলে দাবি করেন তিনি। ফক্স নিউজ ও টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
ইসরায়েল-সিরিয়ার সীমান্ত সফরে যান নেতানিয়াহু। সেখান থেকে পোস্ট করা এক ভিডিওবার্তায় বাশার আল-আসাদের দেশত্যাগের খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, ‘আজকের দিনটি মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসের অন্যতম একটি দিন। ইরানের অক্ষের কেন্দ্রে থাকা বাশার আল-আসাদ এবং তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন হয়েছে। ইরান ও হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে আমরা যে অভিযান পরিচালনা করেছি, তার সরাসরি ফলাফল বাশারের পতন। কারণ এরাই তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকারের মূল সমর্থক ছিল।’
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এ বিজয় শুধু এখানেই থেমে থাকবে না। মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশের জনগণ দমনপীড়ন এবং নিষ্ঠুর সরকারের হাত থেকে পরিত্রাণের পথ খুঁজছেন, তাদের মধ্যে চেইন রিঅ্যাকশনের মতো এটি ছড়িয়ে পড়বে।’
সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের পতন ইরানের জন্য একটি বড় আঘাত। এখন তাদের লেবানন অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের পথ সংকুচিত হয়ে পড়বে। লেবাননে মিত্র হিজবুল্লাহর কাছে স্থলপথে পৌঁছানোর সুযোগ পাবে না ইরান। ফলে হামাসের মতো ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত ইরানের চিরশত্রু ইসরায়েল। নেতানিয়াহুর ভিডিও বার্তায় এই অভিব্যক্তি প্রকাশিতও হয়েছে।
রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি জানায়, প্রথম থেকেই সিরিয়ার বিদ্রোহীদের ইসরায়েল সহায়তা দিয়ে আসছিল। ইসরায়েলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বিদ্রোহীরা। চলতি সপ্তাহে ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম কান ব্রডকাস্টারকে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর এক যোদ্ধা। সেখানে তিনি ইসরায়েলের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলকে ভালোবাসি, কখনও ইসরায়েলকে শত্রু মনে করিনি। আমরা মনে করি, যারা ইসরায়েলকে শত্রু ভাবে না, ইসরায়েলও তাদেরকে শত্রু ভাবে না।’
মাত্র ১২ দিনের অভিযানে গতকাল রোববার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের দখল নেয় দেশটির সরকারবিরোধী বিদ্রোহীরা। সিরিয়ার সশস্ত্র গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল শাম (এইচটিএস) এই অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছে। রোববার পতনের পর স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে দেশ ছাড়েন বাশার আল-আসাদ। রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাশার আল-আসাদ এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে মস্কো।