মিচেল ওয়েনের এমন বিধ্বংসী ইনিংস সত্যিই স্মরণীয়। পুরো টুর্নামেন্টে সিডনি থান্ডার্সের বোলিং আক্রমণ দারুণ কার্যকরী ছিল, কিন্তু ফাইনালে ওয়েনের ব্যাট যেন তাদের জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠল। ৩৯ বলের রেকর্ডগড়া সেঞ্চুরিতে হোবার্ট হারিকেন্সকে প্রথমবারের মতো বিগ ব্যাশের চ্যাম্পিয়ন বানালেন ২৩ বছর বয়সী তরুণ হার্ড হিটার ব্যাটার।
হোবার্টে ফাইনাল ম্যাচে সিডনি থান্ডার্সকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে হোবার্ট। শুরুতে ব্যাট করে জেসন সাঙ্ঘা ও ডেভিড ওয়ার্নরের ব্যাটে ১৮২ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় সিডনি। জবাব দিতে নেমে ৩৫ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় হোবার্ট।
ফাইনাল ম্যাচে হোবার্টের জয়ের নায়ক মিচেল ওয়েন। ১১টি ছক্কা এবং ৬টি চারে সাজানো তার ৪২ বলে ১০৮ রানের ইনিংস ফাইনালের মঞ্চে অনন্য হয়ে উঠেছে। মাত্র ৩৯ বলে সেঞ্চুরি করে তিনি বিগ ব্যাশ লিগের ইতিহাসে যৌথভাবে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছেন, যা ২০১৪ বিপিএলের ক্রেইগ সিমন্সের সঙ্গে ভাগাভাগি করছেন।
রান তাড়ায় শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন ওয়েন। নাথান ম্যাক অ্যান্ড্রু এবং ওয়েস অ্যাগারদের রীতিমতো তুলোধুনো করেন এই ওপেনার। ওয়েনের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে প্রথম ৩ ওভারে হোবার্টের রান গিয়ে দাঁড়ায় ৬২তে। ১৬ বলে নিজের ফিফটি পূর্ণ করেন ওয়েন। বিগ ব্যাশের ফাইনালে এটিই সবচেয়ে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড।
পাওয়ারপ্লের পরও চলতে থাকে ওয়েনের ঝোড়ো ব্যাটিং। ৭ ওভারে ১০৯ রান করে স্বাগতিক দল। ওয়েন এক পাশে ঝোড়ো ব্যাটিং করলেও অন্য পাশে সেলেব জোয়েল খেলেছেন তার স্বাভাবিক ক্রিকেট। তবে খুব বেশি রান করতে পারেননি বাঁহাতি এই ব্যাটার। ১১ বলে ১৩ রান করে অষ্টম ওভারে আউট হন তানভীর সাঙ্ঘার বলে। একই ওভারে আউট হন নিখিল চৌধুরীও।
তবে ওয়েনের বিধ্বংসী ব্যাটিং চলমান থাকায় তেমন চাপ বাড়াতে পারেনি সিডনি। ১০ ওভারে হোবার্টের স্কোরকে ১৩৮ রানে নিয়ে যান তিনি। ১০৮ রান করে এরপর ওয়েন আউট হলেও লড়াইয়ে ফেরার কোনো উপায় ছিল না সিডনির। ম্যাথু ওয়েড ৩২ এবং বেন ম্যাকডরমেট ১৮ রানে অপরাজিত থেকে শিরোপা নিশ্চিত করেন।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে জেসন সাঙ্ঘা এবং ডেভিড ওয়ার্নারের ব্যাটে ওপেনিং জুটিতেই ৯৭ রান করে সিডনি। ৩২ বলে ৪৮ রান করে ওয়ার্নার বিদায় নিলে ভাঙে এই জুটি। তিনে নামা ম্যাথু গিলকেস আউট হন প্রথম বলে। চারে স্যাম বিলিংস ভালো শুরু পেলেও ১৪ বলে ২০ রানের বেশি করতে পারেননি।
এক প্রান্ত আগলে রাখছিলেন সাঙ্ঘা। তবে তার সেই প্রতিরোধ ভাঙেন নাথান এলিস। ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৪২ বলে ৬৭ রান করেন সাঙ্ঘা। শেষদিকে অলিভিয়ার ডেভিস ১৯ বলে ২৬ এবং গ্রিন ৯ বলে ১৬ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন। তাতে হোবার্টের সংগ্রহ গিয়ে দাঁড়ায় ১৮২তে। তবে ম্যাচ শেষে সেটা জয়ের জন্য পর্যাপ্ত হিসেবে প্রতীয়মান হয়নি।