শনিবার রাতভর শক্তিশালী টর্নেডোর তান্ডবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্টেইটে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শনিবার রাতভর টর্নেডোর তান্ডব ছিল টেক্সাস, লুইযিয়ানা, মিসিসিপির ও অ্যালাবামা জুড়ে। টর্নেডোতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে টেক্সাসের হিউস্টন, ব্রিজোরিয়া কাউন্টির অ্যালভিন শহর এবং চেম্বারস কাউন্টি।
ঘণ্টায় ৭০ মাইল গতিবেগে চলা এই শক্তিশালী ঝড় দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে ঘরবাড়ি, এলিমেন্টারি স্কুল ও ডে কেয়ার সেন্টার। উপড়ে পড়েছে গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি। ফলে বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন রয়েছে হাজারো বাসিন্দা। ঝড়ে প্রাণ হারিয়েছে এক নারী। আহত হয়েছে ৪ জন। এছাড়া মিসিসিপির অ্যাডামস কাউন্টিতে নিহত হয়েছেন একজন। আহত হয়েছে আরো দুইজন। বৈরী আবহাওয়ার কারণে হাজারেরও বেশি ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছে। টর্নেডোর গতিপথ এখন দক্ষিণ থেকে পূর্বদিকে সরে গেছে।
সপ্তাহান্তে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া শক্তিশালী টর্নেডো ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞের সৃষ্টি করেছে। শনিবার রাতভর টেক্সাস জুড়ে ছিল টর্নেডোর তান্ডব। একই অবস্থা লুইযিয়ানা এবং মিসিসিপিরও। টেক্সাসের হিউস্টনের উত্তর ও দক্ষিণে ঝড়ের আঘাতে লণ্ডভণ্ড ঘরবাড়ি ও গাছপালা। ব্রিজোরিয়া কাউন্টির অ্যালভিন শহরের এই বাসিন্দা জানান, ঝড়ের সময় ক্রিসমাসের উপহার খোলায় ব্যস্ত ছিলেন তারা। কিন্তু প্রকৃতির পরিকল্পনা ছিল একেবারেই ভিন্ন। মুহূর্তেই উড়ে যায় ঘরের ছাদ।
ঝড়ে নিহত হয়েছে লিভারপুল এলাকার ৪৮ বছর বয়সি এক নারী। নিজ বাসা থেকে ১০০ ফিট দূরে পাওয়া যায় তার মরদেহ। আহত হয়েছেন আরো ৪ জন।
অ্যালভিন শহরের ওয়াল্ট ডিজনি নামের এই এলিমেন্টারি স্কুল এখন পুরোই ধ্বংস্তুপে পরিণত হয়েছে। ভবনের ছাদ উড়ে যাওয়ায় ভেতরের সবকিছুই এখন বিধ্বস্ত। শুধু স্কুল নয়, ধ্বংস হয়েছে ঘর বাড়ি ও ডে কেয়ার সেন্টারও।
এদিকে, হিউস্টনের দক্ষিণের প্লেযার আইল্যান্ডের বাসিন্দা ট্রয় থুর্নটনস জানান তার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা। তিনি বলেন, ঝড়ে ক্ষত্রিগস্থ হয়েছে তার আরভি বা রেসিডেন্টশিয়াল ভিয়েকল। আহত হয়েছেন তিনি এবং আরো একজন। ক্ষতিগ্রস্থ আরো ৫টি আরভি’র মধ্যে দুটি একেবারেই ধ্বংস।
এছাড়া চেম্বারস কাউন্টির নাইনটিন এইটি ফাইভ হাইওয়েতে বিদ্যুতের খুটি উপড়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ। সড়কটি অন্তত দুই দিন বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।
হিউস্টনের বাসিন্দারা এখন ব্যস্ত ঘরবাড়ি পরিস্কারের কাজে। টর্নেডোর তাণ্ডবে মাত্র কয়েক সেকেন্ডেই সবকিছু এলোমেলো তাদের। চলতি বছরে এই নিয়ে তিনবার টর্নেডো আঘাত হেনেছে এখানে।
ঝড়ে দুভোর্গে পড়েছে দেশের কয়েক মিলিয়ন মানুষ। ঘণ্টায় ৭০ মাইল বেয়ে বয়ে চলা এই ঝড়ো বাতাসে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে এখানকার সবকিছূ্, উপড়ে পড়েছে গাছপালা ও বিদ্যুতের খুটি। বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন রয়েছে হাজারো মানুষ।মিসিসিপির জ্যাকসন এবং অ্যাডামস কাউন্টি সহ বিভিন্ন অংশ টর্নেডোর আঘাতে বিপর্যস্ত হয়েছে।
মিসিসিপির জ্যাকসনে কোথাও ঘরের উপর আছড়ে পড়েছে গাছ, কোথাও উড়ে গেছে ঘরের ছাদ, উল্টে গেছে গাড়ি। গাছের আঘাতে আহত দুই ব্যক্তিকে হাসপাতালে পাঠিয়েছে উদ্ধার কর্মীরা। অ্যাডামস কাউন্টিতে প্রাণ হারিয়েছেন একজন। প্রায় ৮১ হাজার বাসিন্দা বিদ্যুতহীন অবস্থায় রয়েছে। এদিকে, স্টেইটের অন্য অংশে কয়েক ইঞ্চি বৃষ্টিতে কলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ি। উদ্ধার কমৃীরা ব্যস্ত বাসিন্দাদের সরিয়ে আসার কাজে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে হাজারেরও বেশি ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছে যা ছুটির এই মৌসুমে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।
এদিকে অ্যালাবামার মনগোমেরি কাউন্টির চিত্রও একই রকম। ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত, গাছপালা উপড়ে আছে, উল্টো হয়ে আছে যানবাহন। আর ভি এবং মোবাইল বাড়ির ধ্বংস্তুপে দেখে মনে হবে ঝড় নয় যেন বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে। এখানকার ফায়ার ডিপার্টমেন্টের অফিসের একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাসিন্দাদের জন্য রেড ক্রস এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ অস্থায়ী আশ্রয়ের ব্যবসা করেছে। বিপদ কেটে গেছে দক্ষিণের, টর্নেডোর গতিপথ এখন পূর্বদিকে। ফলে ঝুকির মুখে রয়েছে কয়েক মিলিয়ন মানুষ।