প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক দিন দিন বাজে হচ্ছে ভারতের। একটি দেশের সঙ্গেও সুসম্পর্ক নেই তাদের। এমনকি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দেশ হওয়ার পর পরও ভারতের সঙ্গে ব্যবধান রেখে চলছে নেপাল। নয়াদিল্লির সঙ্গে কাঠমান্ডুর ব্যবধান দিন দিন বাড়ছেই। নেপালের অর্থনীতি-বাণিজ্য অনেকাংশেই ভারতের ওপর নির্ভরশীল হলেও দিল্লির বলয় থেকে বের হয়ে যাচ্ছে তারা।
ভারতের বলয় থেকে বের হয়ে দেশের অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়নে চীনকে দেখতে চান নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। গত মঙ্গলবার বেইজিং সফরে গিয়ে এই বার্তাই দিয়ে এসেছেন তিনি। চলতি বছরের জুলাই মাসে চতুর্থবারের মতো নেপালের সরকারপ্রধান হিসেবে শপথ নেন ওলি। প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরের প্রথা ভেঙে শত বছরের মিত্র দিল্লির বদলে বেইজিংকে বেছে নেন তিনি।
ওলির সফর নিয়ে বেইজিং জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠকে হওয়ার কথা রয়েছে ওলির। এর আগে স্থলবেষ্টিত দেশ নেপালকে স্থল সম্পর্কযুক্ত দেশের রূপান্তরিত করার অঙ্গীকার করেছিলেন শি।
২০১৭ সালে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনফ্রাস্টাকচার ইনিশিয়েটিভে স্বাক্ষর করে নেপাল। তবে প্রকল্প কাঠামো দাঁড় করানো হলেও এখনো কোনো কিছু বাস্তবায়িত হয়নি। তারপরও প্রথাগত ভারত নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে চীনের দিকে ঝুঁকছেন হিন্দুপ্রধান দেশ নেপালের সরকারপ্রধান।
এখনো নেপালের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে চীনের চেয়ে ভারতের দখলই বেশি। যেখানে কাঠমাণ্ডুর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে দিল্লির অংশ প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ সেখানে বেইজিংয়ের মাত্র ১৪ শতাংশ। তবে এই দিকে পিছিয়ে থাকলেও নেপালে অর্থায়নের ক্ষেত্রে কিন্তু এগিয়ে চীন। বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, নেপালে চীনের অর্থায়নের পরিমাণ ৩১ কোটি মার্কিন ডলার যা ভারতের চেয়ে অন্তত তিন কোটি বেশি।
২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো নেপালে প্রধানমন্ত্রী হন ওলি। তখন দেশটির ওপর তেল অবরোধ আরোপ করে ভারত। ভারতের এমন পদক্ষেপের পরপরই চীনের সঙ্গে জ্বালানি তেল সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করে নেপাল। ওই পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে নেপালের একমাত্র জ্বালানি সরবরাহকারীর তকমা হারায় ভারত। আর চীনের সঙ্গে সহযোগিতার নতুন দুয়ার খুলে।