বাংলাদেশ সচিবালয়ে সম্প্রতি লাগা আগুন নিয়ে মুখ খুললেন এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী। তিনি জানিয়েছেন, সচিবালয়ে আগুনের সূত্রপাত বৈদ্যুতিক স্পার্ক থেকে। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি একথা জানান।

মাকসুদ হেলালী বলেন, ‘প্রথম দিন থেকে আমরা যথেষ্ট সময় নিয়ে আন্তরিকভাবে বিষয়টি দেখার চেষ্টা করেছি। বিভিন্ন সংস্থার সহায়তায় আমরা সুনির্দিষ্ট একটি রিপোর্ট তৈরি করতে পেরেছি। যদিও সুনির্দিষ্ট বলছি, তারপরও এটিকে আরও বেশি সমৃদ্ধ করার জন্য আরও কিছু টেস্ট দেশে-বিদেশে করাবো। তাতে আমাদের রিপোর্ট আরও নিশ্চিত হবে। প্রাথমিকভাবে আমরা দেখেছি, ভিডিও পাওয়ার আগে এবং পরে মিলিয়ে দেখেছি, ফলাফল একই। আগুনের সূত্রপাতের সময় ১টা ৩২ থেকে ৩৯ মিনিট।’

তদন্ত কমিটির ওই সদস্য জানান, একটি নির্দিষ্ট সময়ে নয়, সাত মিনিট ধরে আস্তে আস্তে স্পার্কের মাধ্যমে যে জায়গায় আগুন লেগেছে সেটি গরম হয়েছে। সেখান থেকে ম্যাটেরিয়াল গলে পড়েছে। তারপর সেটা একসময় ইনগনিশন টেম্পারেচারে গিয়েছে। তারপর আগুন ধরেছে। আগুন ধরার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে ধোঁয়া হয়েছে এবং ফ্লেম ভার্টিকালি উপরের দিকে উঠে গেছে। আর ধোঁয়া সচিবালয়ের একটি টানেলের প্রভাবে পশ্চিম দিকে বেরিয়ে গেছে। এতে আপাত দৃষ্টিতে মনে হয়েছে আগুন দুই জায়গায়। বাস্তবে আগুনের সোর্স একটাই। কিন্তু বাতাসের গতি, বিল্ডিংয়ের ডিজাইনের ভিন্নতার কারণে দুই দিকে প্রবাহিত হয়েছে।’

১২ থেকে ১৪ মিনিটে যে আগুন উৎপাদিত হয়েছে সেটি ছড়িয়ে চূড়ান্ত আগুনে রূপায়িত হয়েছে জানিয়ে মাকসুদ হেলালী আরও বলেন, ‘ভার্টিকালি উপরে উঠে যাওয়ায় এটি নেভানো অত্যন্ত কঠিন পর্যায়ে চলে গেছে। ছয়তলার আগুন যখন ছড়িয়ে গেছে সেটি না নিভিয়ে সাত তলায় যাওয়ার সুযোগ ছিল না। যার কারণে ফায়ার ব্রিগেডকে ছয় তলা শেষ করে সাত তলায় উঠতে হয়েছে।

জীবনের রিস্ক নিয়েই তাদের এই কাজ করতে হয়েছে। আমরা এসব তথ্য নিয়ে সিআইডিসহ সবার সঙ্গে মিলিয়ে দেখেছি, আমাদের অঙ্ক করা জিনিস আর ভিডিও এভিডেন্স ৯৯ ভাগ মিলে গেছে। আমরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি আগুন এভাবেই সৃষ্টি হয়েছে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here