এ আর জোয়ারদার
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, “সংবাদমাধ্যম ও মত প্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতা ইতোমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা সবাইকে বলে দিয়েছি, আপনারা মন খুলে আমাদের সমালোচনা করেন। আমরা সবার মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। মিডিয়া যাতে কোনো রকম বাধা বিপত্তি ছাড়া নির্বিঘ্নে তাদের কাজ করতে পারে সেজন্য একটি মিডিয়া কমিশন গঠন করা সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন।
আরও যেসব কমিশন সরকারসহ অন্য সবাইকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে পারে, আমরা তাদের পুনর্গঠন ও সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি যাতে তারা আরও শক্তিশালী হয়, জনকল্যাণে কাজ করে।”
জনাব ইউনুস বাকপটু মানুষ, শেখ হাসিনার মত ভাষাগত সমস্যা তার নাই৷ উনি হেসে মিস্টি মুখে কথা বলেন৷
তার ভাষ্য অনুযায়ী গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন ও গঠিত হয়েছে৷ কিন্তু সাংবাদিকরা কথা বলতে পারছে তো? পারছেনা৷ কারণ তাদেরকে সারাক্ষণ চাকরির এবং হয়রানির ভয়ে থাকতে হচ্ছে৷
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে সাংবাদ মাধ্যম এবং এর কর্মীরা নানামুখী প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যার কারনে তাদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়েছে৷ সংবাদপত্র ও টেলিভিশন অফিসে হামলা, শত শত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা এবং সরকার কর্তৃক কয়েক দফায় সাংবাদিকদের এক্রিডেশন কার্ড বাতিল এবং সাংবাদিকদের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারনে এই অবস্থার উৎপন্ন হয়েছে৷
সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক নয়টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে তৃতীয় অবস্থানে৷
এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেছে বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ)৷ এই তালিকায় পাকিস্তান, ফিলস্তিন, সুদান, লেবানন, সিরিয়া এবং ইউক্রেনের মত দেশগুলো রয়েছে৷ অর্থাৎ, যে দেশগুলিতে যুদ্ধাবস্থা কিংবা যুদ্ধ চলছে সেই দেশগুলির নাম এসেছে৷ বাংলাদেশ তাহলে কোন জাতীয় দেশের আওতায় পরে?
আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, আওয়ামী লীগের পর সরকারের প্রধান প্রতিপক্ষ সাংবাদিকরা৷ সাংবাদিকদের নিযার্তন, নিপীড়ন, ভয়-ভীতি প্রদর্শন সব সময় সব কালেই হয়েছে, কিন্তু ৫ই আগষ্টের পর যা হচ্ছে, তা অভুতপূর্ব৷প্রফেসর ইউনুসের মত একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন এবং শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ব্যাক্তির ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে সাংবাদিকদের এই দূরাবস্থা সত্যিই দু:খজনক৷ কোন গনমাধ্যমই সরকারের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার করতে পারেনা৷
হেনরি ফোর্ড বলেছেন, “এক সঙ্গে আসা হচ্ছে সূচনা, এক সঙ্গে থাকা উন্নতি, এক সঙ্গে কাজ করা সাফল্য”৷
সরকার কি আসলেই সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চায়? মনে হয়না৷ গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রের “চতুর্থ স্তম্ভ” হিসেবে অভিহিত করা হয়। এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধারণা, যার মাধ্যমে বোঝানো হয় যে গণমাধ্যম কোনো রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামোর এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিচার বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ এবং আইনসভা—এই তিনটি স্তম্ভের পাশাপাশি গণমাধ্যম সমাজে জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
চারটি স্তম্ভের একটির যদি এই দুরাবস্থা হয়, তাহলে রাস্ট্র দাঁড়াবে কিভাবে?
বাংলায় একটা প্রবাদ আছে, ‘বিয়ের রাতে বিড়াল মারা, এই সরকার কি এই প্রবাদটিকেই উদাহরণ ধরে এগুচ্ছে? গণমাধ্যম কর্মীদের মনে যাতে ভয় ঢুকে যায়, তারা যাতে নিজেদের মতামত প্রকাশ করতে না পারে, সেইজন্যই কি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সাংবাদিকদের কোনঠাসা করে রেখেছে সরকার?
অপ্রিয় হলেও সত্য, আপনারা যাকে ফ্যাসিস্ট সরকার বলছেন, সেই আওয়ামী লীগের সময়ে ও গণমাধ্যমে কিঞ্চিত হলেও এখনকার থেকে স্বাধীন ছিল৷ অন্ততঃ গণমাধ্যমে গুলিতে খুব সীমিত হলেও বিরোধী মতের উপস্থিতি ছিল৷
সরকার ক্ষমতা গ্রহনের পর পরই হত্যা মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের ভীত সন্তস্ত্র করে ফেলল৷
এর পর কয়েকজন সাংবাদিকদের এক্রিডিশন কার্ড বাতিল করা হয়৷ তালিকায় যে নাম গুলি দেখেছি, ওই সাংবাদিকদের মোটামুটি সবাই বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে কর্মরত, অন্ততঃ তারা ভুয়া সাংবাদিক নয়৷
এখন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ এটা কেন করা হলো? যাতে সাংবাদিকরা প্রকৃত ঘটনা আঁচ করতে না পারে? কিংবা অন্য কোন পরিকল্পনা আঁটা৷
নাকি সচিবালয়ে অগ্নিকান্ডকে অযুহাত হিসেবে নিয়ে নিজস্ব সাংবাদিকদের অস্থায়ী অ্যাক্রিডিটেশন দেয়ার জন্য পরবর্তীতে নতুন আবেদন চাওয়া হচ্ছে?
তথ্য উপদেস্টা বলেছেন, পি আইডি থেকে পাস সংগ্রহ করে সাংবাদিকরা সচিবালয়ে ঢুকতে পারবে৷ দেখা যাক, এই ক্ষেত্রে তারা শুধু নিজেদের পছন্দের সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার দেয় কিনা৷
শোনা যাচ্চে, সারাদেশের বিটিভি জেলা সাংবাদিকদের চাকরি নাই । এ বিষয়ে কোন সাংবাদিকদের কোন প্রকার কারণদর্শাও নোটিশ দেওয়া হয়নি৷ কি অদ্ভুত!!!
সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা কি ভুলে গেছে যে চাকরির সাথে মানুষের খাওয়া, পরার বিষয়টিও জড়িত৷
উপদেষ্টারা কি বলতে হবে জানে না৷ বক্তব্য প্রদান করে তারা তাদের বক্তব্য সেইসব বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিচ্ছে৷ ভয়ংকর রকমের সমন্বয়হীনতা চলছে৷ আর এই নিউজ প্রচারের রেশ ধরে সাংবাদিকরা হয়রানির শিকার হচ্ছে৷ আমি বলবো, সরকারের সঙে সংশ্লিষ্টদেরকে মিডিয়ার সাথে যোগাযোগ স্থাপন কিংবা কথা বলার বিষয়ে আরো কৌশলী হতে৷ আপনারা হুট করে একটা কিছু বলে ফেলবেন, আর সেই বিষয়ে সংবাদ প্রচার হলে সাংবাদিকদের হেনস্থা করবেন কিংবা কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করবেন শাস্তিমূলক ব্যাবস্থা গ্রহন করতে, এটা অব্যাহত থাকলে আখেরে কারোই ভালো হবেনা৷
অনেক সংবাদ দেশবাসীকে বিদেশী সংবাদমাধ্যমের মধ্য দিয়ে জানতে হয়৷ এই যেমন, সময় টিভির সাংবাদিকদের চাকরি যাওয়ার বিষয়টি৷
২৩ শে ডিসেম্বর, আমার কতিপয় ফেসবুক ফ্রেন্ড যারা পেশায় সাংবাদিক তারা তাদের ফেসবুক পেজে বার বার পোস্ট দিচ্ছিলো৷ কেউ লিখেছিলো ” সাংবাদিকদের চাকরি অনেক টেস্টি, সবাই খেতে চায়”৷ আবার কেউ লিখেছে “সাংবাদিকদের ভয় নিয়ে কাজ করা অবশ্যই স্বাধীন সাংবাদিকতার অন্তরায়”৷
কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছিলাম না৷ জানার চেষ্টা করছিলাম৷ কিন্তু টিভি গুলিতে এই নিয়ে কোন নিউজ নেই৷ পত্রিকাগুলি কিংবা অনলাইন এই নিয়ে কোন টু-শব্দ ও করেনি৷ ২৪ ডিসেম্বর হঠাৎ এএফপির একটা নিউজ চোখে পড়লো৷
ফ্রান্সের জাতীয় সংবাদ সংস্থার তাদের নিউজে জানিয়েছে, সমন্বয়কদের একদল অনুসারি তারা সংখ্যায় ২০ জন হবে৷ তারা সময় টিভির মালিকের অফিসে যায় সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহর নেতৃত্বে, যেখানে তারা দশজন সাংবাদিকের নাম দিয়ে বলেছে এদেরকে চাকরিচ্যুত করতে হবে৷ এমনকি তারা ভয় ভীতি দেখায় যে এদেরকে চাকরিচ্যুত করা না হলে সময় টিভি স্টেশনই থাকবে না৷
ভীত সন্তস্ত্র মালিকরা এই হুমকির প্রেক্ষিতে পাঁচজন সাংবাদিককে সাথে সাথে চাকরিচ্যুত করে কোন কারন দর্শানো ছাড়াই৷ পপরবর্তীতে, দশজন সাংবাদিক তাদের চাকরি হারায়৷
যদিও, হাসনাত এই ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়েছে অন্যভাবে৷ সে বলেছে, “সময় টেলিভিশনের পাঁচজন গণমাধ্যমকর্মীর আকস্মিক চাকরি হারানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে যেসব অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে তা অসত্য ও ষড়যন্ত্রমূলক।”
তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্যই নাকি এইরকম সংবাদ প্রচার করা হয়েছে৷ তিনি চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের চাকরিতে পূনর্বহাল করার দাবিও জানিয়েছে৷
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ছিল ছাত্রলীগ আর এখন আছে হাসনাতের নেতৃত্বে তরুনরা, যাদেরকে গুন্ডা কিংবা ষন্ডা বলাই শ্রেয়৷ যাদের কাজ হলো হুমকি দেয়া, ভয়ভীতি প্রদর্শন করা৷
সময় টিভির সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুতি এবং হাসনাতের ভুমিকা নিয়ে সংবাদটির প্রতি পাঠক কিংবা দর্শকের আগ্রহ থাকাটা স্বাভাবিক৷ অথচ, এ এফ ফি এই নিয়ে সংবাদ না করলে বিষয়টি নিয়ে ধোয়াশা থেকেই যেতো৷
দেশের কোন টিভি চ্যানেল তো নয়ই এমনকি প্রথম আলো, ডেইলি স্টার কিংবা বিবিসি এটা নিয়ে রিপোর্ট করতে সাহস পায়নি৷
এএফপির সংবাদ প্রকাশের পর, দেশের মাত্র কয়েকটি মিডিয়া ফ্রান্স ভিত্তিক এই সংবাদ সংস্থাকে উদ্ধৃত করে নিউজ করেছে, যাতে তাদের ঘাড়ে কোন দোষ না চাপে৷
তবে কি সরকার সংবাদমাধ্যমকে তাদের প্রতিপক্ষ মনে করছে? দেশে আসলে কোন সাংবাদিক কি স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছে?
কেবলমাত্র খালেদ মহিউদ্দিন, গোলাম মাওলানা রনি এবং মাকসুদ কামাল তাদের মতামত কিংবা সরকারের অসংগতিগুলি দর্শকদের সাথে শেয়ার করতে পারছেন৷ এদের মধ্যে, খালেদ মহিউদ্দিন ছাড়া বাকি দুজনই বিএনপির মদদ পুষ্ঠ আর খালেদ মহিউদ্দিন দেশের বাইরে অবস্থান করছে৷ মানে, নিরাপদ অবস্থানে আছেন৷
বাংলাদেশে কোন কালেই প্রেস উইং এতটা তৎপর ছিলনা৷ তার মোটামুটি নিয়মিতই সরকারের বিভিন্ন কাজের ব্যাখ্যা দিচ্ছে৷ একেবারে সমন্বয়হীনতার চুড়ান্ত পর্যায়৷ সংবাদ মাধ্যমগুলি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারলে এই ভুল বোঝাবিঝি কিংবা দেশবাসীর সাথে এই দুরত্ব তৈরি হতোনা৷ সাংবাদিকদের এই দুরাবস্থা কখনোই কোন কালে ছিলনা৷
২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপি সাংবাদিকদের অবদমন করার এই প্রক্রিয়ার গোড়াপত্তন করে৷ তারা প্রথমে একুশে টিভিকে টার্গেট করে এবং পরে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে৷ ২০০২ সালে একুশে টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশে প্রচলিত সম্প্রচার আইন লঙ্ঘনজনিত কারণে তাদের সম্প্রচার কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হয় আর বাসসের ৩০ জনের বেশি সংবাদিককে কোন দর্শানো ছাড়াই চাকরিচ্যুত করা হয়৷ এইগুলি রাজনেতিক প্রতিহিংসার বহি:প্রকাশ ছিল, এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা৷
২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ এই ধারা অব্যাহত রাখে৷ বাসসের কয়েকজন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করা কিংবা ইটিভির কয়েকজন সাংবাদিককে তারা জেলেও পাঠিয়েছিলো৷
গত ১৬ বছরে, আওয়ামী লীগ সংবাদ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য হেন কাজ নেই যা করেনি৷ তাদের সি আর আই নামে একটা উইং ছিল যা গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করার কাজটি করতো৷
কিন্তু, এখন যা হচ্ছে, তা অভুতপূর্ব৷ প্রায় প্রতিটি মিডিয়া হাউজের শীর্ষ পদ গুলি বিএনপি-জামাত পন্থী সাংবাদিকরা দখল করেছে৷ ডেইলি স্টার আর প্রথম আলো ব্যতিক্রম৷ কিন্তু তাদেরকে অন্যভাবে প্রেসারে রাখা হচ্ছে৷ যারা কয়েক দিন আগে প্রথম আলোর সামনে বিরিয়ানি রান্না করলো তাদের সাথে কি সমন্বয়কদের সংযোগ নেই?
আওয়ামী পন্থী কিংবা ওই সময়ে নিয়োগপ্রাপ্ত গনমাধ্যম কর্মীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছে চাকরি নিয়ে৷ এমনকি রাস্ট্রায়াত্ত বার্তা সংস্থা বাসসের সাংবাদিকদের একের পর এক কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করা হচ্ছে, তারা চাকুরি হারানোর ভয় নিয়ে চরম নিরাপত্তায় দিনাতিপাত করছে৷
আমার কথা হলো, সাংবাদিকদের কেন দলীয় পরিচয় থাকবে, তাদের উদ্দেশ্য থাকবে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করা কিন্তু বিগত বছরগুলোতে এটা সম্ভব হয়নি৷ অধিকার আদায়ের জন্য একটা প্লাটফর্ম থাকতে পারে, কিন্তু বাস্তবে সাংবাদিকদের শত শত সংগঠন, যাদের মূল কাজ হলো নিজেদের আখের গোছানো৷ কিছু অযোগ্য, অপেশাদার এবং চাটুকার সাংবাদিকরা এই সংগঠনগুলির নেতৃত্ব দিচ্ছে৷ এই অবস্থার পরিবর্তন দরকার৷
অথচ, মালিক পক্ষ একতাবদ্ধ৷ তাদের কোন আলাদা ফোরাম নাই৷ যে কোন সরকারের কাছ থেকে সুবিধা আদায় করার জন্য তারা সাংবাদিকদের কাজে লাগায়, তদবীর করে৷
যেসব সাংবাদিকরা ইউনিয়ন করে, যারা রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে দ্বিধা বিভক্ত, তাদের মতাদর্শ কি তারা যে সকল মিডিয়ায় কাজ করে, তা প্রতিফলিত হয়? বরং মালিক পক্ষই নির্ধারণ করে যে সংবাদমাধ্যমে কি ধরনের সংবাদ প্রচারিত কিংবা প্রকাশিত হবে৷ কিন্ত সরকার পরিবর্তন হলে তাদের কিছু হয় না, বরং সব ধরনের নিপীড়নের স্বীকার হতে হয় সাংবাদিকদের৷
মোদ্দাকথা হলো, তিনটা পক্ষেরই সংস্কার দরকার৷ এই সংস্কার করতে গিয়ে যাতে কোন সাংবাদিক হয়রানির শিকার না হয়, চাকরি না হারায় এবং সর্বোপরি জীবন না হারায় তা সুনিশ্চিত করতে হবে সরকাকেই কারণ আপনারা এই দেশের আমুল পরিবর্তন আনবেন, সেই প্রতিশ্রুতিই দিয়েছিলেন৷