ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পেছনে মেট্রোরেলের দুটি পিলারে থাকা শেখ হাসিনার গ্রাফিতি মুছে ফেলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শেখ হাসিনার প্রতি ঘৃণার গ্রাফিতি মুছে ফেলার ঘটনা প্রক্টরিয়াল টিমের ‘অনিচ্ছাকৃত ভুল’ বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। রোববার প্রক্টর অফিস থেকে এ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়।
ঢাবির প্রক্টর অফিসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- আমরা অতি দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, ২৯ ডিসেম্বর গভীর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পেছনে মেট্রোরেলের দুটি পিলারে থাকা শেখ মুজিব এবং স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ঘৃণাসূচক গ্রাফিতি মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়। জুলাই আন্দোলনে এই দুটি গ্রাফিতি বিপ্লব, প্রতিরোধ ও ফ্যাসিবাদ ধ্বংসের প্রতিনিধিত্ব করে। এই স্মৃতিকে তাজা রাখা এবং প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। এটি প্রক্টরিয়াল টিমের অনিচ্ছাকৃত ভুল। এ জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে আমরা আরও সতর্ক থাকার অঙ্গীকার করছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রক্টরিয়াল টিমের উপস্থিতিতে গত রাতেই শিক্ষার্থীরা মুছে ফেলা গ্রাফিতি অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে এঁকেছেন। এই স্তম্ভকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিক ঘৃণাস্তম্ভ হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ছাত্র–জনতার এই ঘৃণাকে যুগ যুগ ধরে সংরক্ষণের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গ্রহণ করবে।
উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে টিএসসি–সংলগ্ন মেট্রোরেলের পিলারে থাকা শেখ হাসিনার প্রতি ঘৃণাস্তম্ভ মুছে ফেলা হয়। ঘটনাটি জানাজানি হলে শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিকভাবে রাজু ভাস্কর্যের পাশের ঘৃণাস্তম্ভের সামনে জড়ো হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদের অনুমতি নিয়ে এই কাজ করা হয়েছে জেনে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। একই সঙ্গে তাঁরা প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেন। রোববার ফ্যাসিবাদবিরোধী শিক্ষার্থী ব্যানারে প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন তাঁরা। এ সময় ‘আবু সাঈদ, মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘অবিলম্বে প্রক্টরকে, পদত্যাগ করতে হবে,’ ‘ঘৃণাস্তম্ভ মুছল যারা, স্বৈরাচারের দোসর তারা’ ইত্যাদি স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
মেট্রোরেলের রাজু ভাস্কর্য–সংলগ্ন দুই পিলারের শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রাফিতি আঁকে ছাত্রলীগ। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার পর জনতা শেখ হাসিনার গ্রাফিতিতে জুতা নিক্ষেপ, রক্তের প্রতীকস্বরূপ লাল রং, ইটপাটকেল ও ঝাড়ু মেরে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ফলে একসময়ের গ্রাফিতি জনতার ক্ষোভ ও ঘৃণার প্রতীকে রূপ নেয়।